শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২২ পূর্বাহ্ন

আপডেট
জয়পুরহাটে বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি, আশার আলো দেখছেন কৃষকরা

জয়পুরহাটে বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি, আশার আলো দেখছেন কৃষকরা

জয়পুরহাটে বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি, আশার আলো দেখছেন কৃষকরা

শাহাদুল ইসলাম সাজু, জয়পুরহাট সংবাদদাতা : বছরে প্রায় ১৩ কোটি টাকার শুধুমাত্র তরমুজ বিক্রি হচ্ছে উত্তরাঞ্চলের ছোট জেলা জয়পুরহাটে। তরমুজ চাষ করে অন্যান্য ফসলের তুলনায় অধিক লাভবান হওয়ায় বানিজ্যিক ভাবে তরমুজ চাষে আশার আলো দেখছেন স্থানীয় কৃষকরা।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাঁচবিবি উপজেলার আয়মা জামালপুরের দামোদরপুর গ্রামের তরমুজ চাষী উত্তম কুমার এবার তিন বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করে ৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। আরেক তরমুজ চাষী গৌতম কুমার দুই বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করে এক লাখ ৯৭ হাজার টাকা বিক্রি করেন। জয়দেবপুর গ্রামের হেলাল উদ্দিন ১৬ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করে ৬১ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন বলে জানান।

জেলার ২৬ গ্রামের প্রায় ৭৫০ বিঘা জমিতে বর্তমানে তরমুজের চাষ হচ্ছে। এতে তরমুজ উৎপাদন হয়ে থাকে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন। তরমুজ চাষের সঙ্গে জড়িত জেলার প্রায় ৮৭০ জন কৃষক। বিশেষ করে পাঁচবিবি ও সদর উপজেলায় কৃষকরা তরমুজ চাষ করছেন অধিক হারে। সদর উপজেলার ধলাহার এলাকায় ইয়েলো বার্ড, মধুমালাসহ বেশ কয়েক প্রকার তরমুজ মাচায় দুলছে। এরমধ্যে ইয়েলোবার্ড জাতের তরমুজ খুব জনপ্রিয়। সারা বছর তরমুজ চাষ হলেও গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ কওে বেশি লাভবান হচ্ছেন বলে জানান কৃষকরা।

ধলাহার গ্রামের তরমুজ চাষি আফজাল হোসেন জানান, জেলার বিভিন্ন স্থানে মাচায় তরমুজ চাষ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে ৫০ শতাংশ জমিতে ও একই এলাকার চাষি আব্দুর রহমান ৩৩ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তিন মাসের ফসল হিসেবে এসব তরমুজ চাষ করে খরচ বাদে বিঘা প্রতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ থাকছে বলে জানান কৃষকরা। বর্তমানে বাজারে কালো রংয়ের তরমুজ ১০০ টাকা ও হলুদ রংয়ের তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি। অসময়ে তরমুজ চাষ করে দাম ভালো পাওয়ার কথা জানান, তরমুজ চাষি আফজাল, শহিদুল ও আব্দুর রহমান।

সারা বছর তরমুজ চাষ হলেও বর্তমানে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা এবং কারিগরি সহায়তা প্রদান করেছে স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘জাকস ফাউন্ডেশন’। জাকস ফাউন্ডেশনের মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন শাহিন জানান, স্থানীয় ভাবে চাষ হওয়া ইয়েলো বার্ড, মধুমালাসহ বেশ কয়েক জাতের তরমুজ সু-স্বাদু হওয়ায় চাহিদা কিছুটা বেশি তাই দামও তুলনামুলক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। মৌসুমী তরমুজ গুলো অন্য জেলা, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসে। ওই তরমুজ শেষ হওয়ার পরেই স্থানীয় ভাবে এ তরমুজ বাজার আসে বলে জানান তিনি।

জাকস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোঃ নূরুল আমিন জানান, সর্ম্পূর্ণ বিষমুক্ত ভাবে এ তরমুজ চাষ করা হচ্ছে। বাজারে এ তরমুজের চাহিদা একটু বেশি থাকে, ফলে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভীন জানান, স্বল্প সময়ের ফসল হিসেবে তরমুজ চাষ বেশ লাভজনক। জয়পুরহাটে চলতি মৌসুমে সাতশ বিঘার বেশি জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষ করে ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় তরমুজ চাষিরা বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |